ভোলা-বরিশাল সেতু প্রকল্পের পরিবেশগত প্রভাব নিরুপনের জন্য মতবিনিময় সভা
ষ্টাফ রিপোর্টার: ভোলা বরিশাল সেতু প্রকল্পের পরিবেশগত প্রভাব নিরুপনের জন্য ভোলার স্থানীয়দের সাথে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার (৩০ জানুয়ারি) সকাল ১০টায় পশ্চিম ইলিশা ইউনিয়ন পরিষদ হল রুমে বরিশাল ও ভোলার পরিবেশ অধিদপ্তরের যৌথ আয়োজনে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে পশ্চিম ইলিশা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জহিরুল ইসলামের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন, পরিবেশবাদী পরামর্শক ড. তাজুল ইসলাম চৌধুরী, বশির আহম্মেদ, ভোলা পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক তোতা মিয়া।
সভায় পরিবেশবাদী গবেষক ড. তাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ভোলা-বরিশাল সেতুর লাহারহাট মিয়া বাজার সিঙ্গেরকাটি গ্রাম হয়ে শ্রীপুরের উপর দিয়ে ভেদুরিয়া ফেরি ঘাটের স্থানে এলাইনমেন্ট নির্ধারণ করা হয়েছে। মূল সেতুর দৈর্ঘ্য ১০.৮৬৭ কি.মি. ও দুপার্শ্বে সংযোগ সড়ক ৫.৪৯৯ কি.মি, সহ মোট ১৬.৩৬৭কি.মি দীর্ঘ ও ৬৯.৫ মি. প্রস্থে মোট ৫১৭ একক জমি অধিগ্রহণ করা লাগবে। সকল বৈধ জমির মালিকগণ তাদের নিজ নামে ব্যাংক একাউন্টে বর্তমান মূল্যের দ্বিগুণ থেকে তিনগুণ টাকা প্রদান করে জমি অধিগ্রহণ করা হবে এবং ৪১৩৪৮টি গাছ কাটা পরবে। যে পরিমাণ গাছ কাটা পরবে তার তিনগুণ নতুন গাছ লাগানোর পদক্ষেপ গ্রহন করা হবে।
এছাড়াও তিনি বলেন, সেতু বাস্তবায়নের ফলে পরিবেশের উপর কোন ক্ষতিকর প্রভাব পড়বে কী না- তার মাঠ পর্যায়ে জনমত গ্রহন করার জন্য এ সভার আয়োজন করা হয়েছে। পরে তিনি স্থানীয়দের মতামত দেওযার জন্য অনুরোধ করলে স্থানীয় সাধারণ জনগণ ও ইউপি সদস্যরা বলেন, ভোলা-বরিশাল সেতু ভোলার মানুষের জন্য পরিবেশগত অপূর্ণতা! ব্রীজ বাস্তবায়নে যে সকল বিষয় পরিবেশের উপর খারাপ প্রভাব পড়বে তার চেয়ে বেশি ভালো প্রভাব পড়বে। ভোলা-বরিশাল সেতু হলে ভোলার প্রাকৃতিক গ্যাসকে কাজে লাগিয়ে শিল্পনগরী গড়ে উঠবে, এতে ভোলার মানুষের আর্থসামাজিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে।
এছাড়াও স্থানীয়রা দাবি করে বলেন, চরের জমি নিয়ে মামলা মোকদ্দমা চলমান থাকার কারণে একই জমি দুই-তিন বার ক্রয় বিক্রয় করা হলেও স্ট্যাম্প ছাড়া বৈধ কোনো কাগজপত্র নেই। এসকল জমির বাড়ীর মালিকদের অন্যত্র পূর্ণবাসন করার জন্য দাবি তুলেন।
পরিবেশবীদ পরামর্শক বশির আহমেদ বলেন, সেতু নির্মাণে নদী ও খালের প্রবাহের গতিধারা অব্যহত রাখতে এ সেতুর ২০০ মিটার পর পর পিলার ডিজাইন করা হয়েছে, যাতে নৌযান চলাচলে সুবিধা ও নদীর প্রবাহের গতিবেগ অব্যাহত থাকে। এ ছাড়াও সেতুর দুপার্শ্বে ১৮.০৭৫ কি.মি. নদী শাসনের কাজ করা হবে, এতে নদীর তীর সংরক্ষণ থাকবে।
এসময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলার আলিমাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ ইমরান হোসেন বাপ্পি, সোস্যাল এক্সপার্ট সাইফুল ইসলাম, পশ্চিম ইলিশার ইউপি সদস্য ও প্যানেল চেয়ারম্যান সেলিম হাওলাদার, ইউপি সদস্য ওমর ফারুক গাজী, সমাজ সেবক মিজানুর রহমান হারুন, আব্দুল খালেক প্রমূখ।
অনুষ্ঠানের সভাপতি পশ্চিম ইলিশার চেয়ারম্যান জহিরুল ইসলাম বলেন, ভোলার অবিসংবাদিত নেতা জনাব তোফায়েল আহম্মেদ এর জীবনের শেষ স্বপ্ন ভোলা-বরিশাল ব্রীজ নির্মাণ। এ ব্রীজ বাস্তবায়নে সকল প্রকার স্থানীয়দের সহযোগীতা থাকবে বলে অভিব্যক্ত প্রকাশ করে অনুষ্ঠান সমাপ্তি ঘোষনা করেন।